রংপুর-৩ সদর আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চমক সৃষ্টি করে সদলবলে কর্মীদের নিয়ে মাঠে নামলেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা ইসলাম রানী। প্রচারণাকালে মনোনয়ন জমা দিয়ে নির্বাচন করছেন জানতে চাইলে রানীর কর্মী রেহানা, আসমা, দোলাসহ অন্যরা বলে ওঠেন, কেনরে, আমরা নির্বাচন করলে তোর কোনো অসুবিধা আছে! এ সময় তাদেরকে আশ্বস্ত করে সাংবাদিকরা জানতে চায় কোনো অসুবিধা নাই আমি সাংবাদিক তাই নির্বাচন বিষয়ে জানতে চাই। এ সময় তারা আবার বলেন, তোর হাতে ভিডিও ক্যামেরা নেই, মাইক্রোফোন নেই তুই কেমন সাংবাদিক রে! তখন তাদের বলা হয়, পত্রিকার সাংবাদিকদের কলম দিয়ে লিখেই পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে। এ সময় রানী এগিয়ে এসে বলেন, অবহেলিত ও নেতৃত্বশূন্য রংপুরের উন্নয়নের জন্যই আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। তিনি বলেন, ন্যায় অধিকার ট্রান্সজেন্ডার উন্নয়ন সংস্থার আমি সভাপতি।
দীর্ঘদিন ধরে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করে আসছি। সারা দেশের তুলনায় রংপুর দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে রয়েছে। রংপুর অঞ্চল সবচেয়ে অবহেলিত। এটি সঠিক নেতৃত্বশূন্য অঞ্চল। দেশের যত উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা রয়েছে তা থেকে রংপুর বঞ্চিত। সঠিক নেতৃত্ব নেই বলে রংপুরের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হচ্ছে না তাই আমাকে এগিয়ে আসতে হলো।
নেতৃত্বের শূন্যস্থান পূরণে আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। আনোয়ারা রানী আরও বলেন, নির্বাচিত হই কিংবা পরাজিত হই, তা আমি মেনে নেবো। তিনি আরও বলেন, হিজরা জনগোষ্ঠীর ৩৯২ জন সদস্যের মধ্যে আমি দেড়শ’ জনকে সমাজসেবার বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষিত করেছি। ৩০ জন সদস্যকে আমি হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ দিয়ে রূপান্তর নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শুরু করেছি। আমি রংপুরের একটি কারখানায় ১১ জন হিজরা সদস্যের চাকরির ব্যবস্থা করেছি।
তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের পর থেকে আমি গণমাধ্যমকর্মীদের ভালো সাপোর্ট পাচ্ছি। সাধারণ মানুষও আমাদের এখন ভালোভাবে গ্রহণ করছে। এ কারণে আমি অনেক আশাবাদী। উল্লেখ্য, রংপুর-৩ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনে আনোয়ারা ইসলাম রানী ছাড়াও অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, আওয়ামী লীগের প্রার্থী তুষার কান্তি মণ্ডল, জাকের পার্টির লায়লা আঞ্জুমান আরা বেগম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের মো. সহিদুল ইসলাম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মো. আব্দুর রহমান রেজু।